সোমবার, ১৫ মার্চ ২০২১, ০৫:২৮ অপরাহ্ন
শাহেদ কায়েসের কবিতা
সহজিয়া প্রেমের পদ্য
৬
নকশিকাঁথার চিত্রটি তোমার শরীরে দেখে
কথাহীন ধূলি হয়ে তাকিয়েছিলাম একদিন
সবুজ শরীর জুড়ে ছিল অরণ্যের কোলাহল
হৃদয় দিয়ে বেঁধেছি সমস্ত হৃদয়, সেই থেকে
পৃথিবী আমার কাছে ভীষণ ছোট মনে হয়।
যে চিত্র ফুটিয়ে তোলেন হোসনেয়ারা আপা
সেলাইয়ের ফোঁড়ে, সে কাঁথা শোনায় কাহিনী
বাতাসে বিচ্ছেদী সুর প্রতিধ্বনি তোলে একা
দিগন্তপাখায় কেন যে ডাকে সূর্যাস্তের নদী!
সেলাইয়ের নৈঃশব্দ বুকে মহাকাব্যিক বয়ান
সেলাই হচ্ছে আমার চোখ, প্রতীক্ষায় আছি
ধূলি পথে কবে যে আসবে কাঙ্ক্ষিত চরণ!
৭
এলো মধুঋতু— মাদলের মতো লাজুক কণ্ঠস্বর
ভেসে আসে সমুদ্র সি-গাল, জাহাজের পিছু-পিছু
ইচ্ছে এক বাউল পাখি, ইচ্ছে এক বেখেয়ালি নদী
স্থানিক গতিতে মন, গন্তব্যহীন যেদিকে ইচ্ছে চল
কোমল আঙুল গড়িয়ে ঝরছে অনুচ্চারিত ঢেউ
কেঁপে উঠছে প্রাচীন বুক— সাংকেতিক আলো
মায়াবী বৃত্তের মাঝে খেলা করে উজ্জ্বল মাছেরা
মন যখন অস্থির, গতিতে পা— তুমি বললে ‘না’
স্বপ্নে যেদিন আর সময় থাকবে না জেগে ওঠার
বাউণ্ডুলে কবি বলে ডেকো আমায় সমুদ্র-মেয়ে
প্রণয়ে বিলাপ— “ও সখি, ও জীবনতরীর নেয়ে”
৮
নদীর ঠোঁটে একটি কালো তিল
তাকিয়ে আছে তীব্র অহংকারে!
গাঙের বাঁকে ছোট্ট একটা চিল
গেল উড়ে মোহন চিৎকারে…
প্রতিটি সম্পর্ক অভিযোজনের—
ভিতর দিয়ে অসীমের কথা বলে
সম্পর্ক একটি অলৌকিক স্পর্শ
উপরে শান্ত— চোরা স্রোত তলে…
কত কথা তাঁর আকাশের সঙ্গে
নদীর বুকে কত যে সুপ্ত অভিমান
দিগন্তের কাছে অঙ্গ ছুঁয়েছে অঙ্গে—
স্পর্শে আকাশ ভেঙেছে জলমান
৯
কেন যে ফেলে যাও
মায়াবী পালক
উড়েই যাবে যদি—
মরমী পাখি!
হয়নি বলা স্পষ্ট করে
যেই কথাটি, সেই কথাটি
জানে শুধুই একতারাটি