মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই ২০২১, ০৭:২১ অপরাহ্ন
ফুয়াদ হাসানের কবিতা
কবিতা লেখলে
কবিতা লেখলে
সাদা পৃষ্ঠারা
বিষে নীল হয়ে যায়
কবিতা লেখলে
সাদা পাতাগুলো
রক্তিম অসহায়
কবিতা লেখলে
সাদা পাতাগুলো
কাফনের ন্যায় সাদা
কবিতা লেখলে
সাদা পৃষ্ঠারা
ঝরে পড়া অনুরাধা
কবিতা লেখলে
সাদা পাতাগুলো
হলদে মলিন যেন
কবিতা লেখলে
সাদা পৃষ্ঠারা
এত কালো হয় কেন
বাড়িওয়ালা
একরুমের পুরানো বাসা
নেই আলাদা রান্নাঘর
এখানে সব–
খাওয়া, শোয়া ও নাকডাকা
বৃষ্টিকালে ডুবে গেলেও
প্রায়ই ঘরে পানি থাকে না
বিদ্যুৎ বা গ্যাস চাওয়া হাস্যকর।
পশুপাখির হট্টগোলে
খোলার কোন সুযোগ নেই
সীল দরজা, জানালাটুকু
অনেকদিন হলো, দেখতে আসে না কেউ
একবারও দেখিনি বুড়ো বাড়িওয়ালাকে
বিশ্বাসী ঐ কর্মচারী এসে ফি-মাস ভাড়া নিয়ে যায়
ডায়েরির শায়েরি
১৬.
সেই দিনগুলো ছাড়া প্রতিদিনের পাতায় কিছু না কিছু লেখা। শুধু সে ক’দিন বাদে। খুব অল্প কয়েকটা দিন। যে দিনগুলো আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মৃত্যুর মুহূর্তে যে দিনগুলোর কথা মনেপড়বে! সেই পাতাগুলো খালি পড়ে আছে, পড়ে থাকবে চিরদিন।
১৭.
কত কিছু লিখতাম, তবু কি লেখা হতো সবকিছু। কতকিছু লিখতাম না, লেখা থাকতো যদি সেগুলোও।
১৮.
এগুলো কী স্বপ্ন না বাস্তব তা বোঝা যাচ্ছিল না, হতে পারে স্বপ্নের ভেতর আরেকটি দীর্ঘ কোন নতুন স্বপ্ন, নাকি সেই পুরাতন, শৈশবে যে স্বপ্ন দেখার পর কান্নায় ঘুম ভেঙে যেতো প্রায় রাতে, তাবিজ-কবচের সাথে কতো পানিপড়া…
যা এড়ানও যায় না কিছুতে। যেখান থেকে কোনভাবেই বের হওয়ার সুযোগ ছিল না। সে কি কোন অমিমাংসিত ধাঁধা, ক্লাস নাইনের উচ্চতর গণিতের জটিলাঙ্ক, মাথার ভেতর লাটিমের মত ঘুরতে থাকলো। স্বপ্নের ভেতর থেকে টুকে রাখা কল্পনাগুলো কোন খাতায় যে রেখেছি।
১৯.
আমার দুই দুধভাই প্রায় মায়ের দুধ খাওয়া নিয়ে ঝগড়া করতো, তাদের কাণ্ডকারখানায় আমার খিদেটাই পানি হয়ে যেত প্রায়; তাই, দূর থেকে সৎ-সহোদরের মতো তাকিয়ে থাকতাম তাদের দিকে!
অনেক কথার ভিড়ে এই কথাটাও মাকে জিজ্ঞেস করবো-করবো করে আর করা হয়নি।
২০.
হুদহুদ পাখির ডাক শুনতে পেলে কেন জানি কেমন ভয়-ভয় হয়, বুকের ভেতর প্রথম প্রেমিকা হারানোর শূন্যতা ভর করে। ওরা এই পবিত্র ও ভাগ্যবান পাখিদের নিয়ে সোলেমান পয়কাম্বর আমলের গল্প শোনাতে-শোনাতে ঘুম পাড়িয়ে দেয়। মরার মতো ঘুমের ঘোরেও হুদহুদ পাখির ডাক মা-মরা বাড়ির মত বিমর্ষ করে রাখে।
নীতিকাব্য
১.
সক্রেটিস জানতেন, তিনি কিছু জানেন না
আমি সেটাও জানি না
২.
ব্রুনোকে পুড়িয়ে মারার পর থেকে
পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘোরে
৩.
হিটলারের বেহালার সুর শুনলে অনেকের কান্না পাবে
৪.
লেলিন নয় লেলনও নয় আমাকে টেনেছে লালন
৫.
খাবারঘরের দেয়ালে লাগিয়ে রেখেছি–দ্য লাস্ট সাপার
৬.
ইবলিশ একসময় ফেরেশতাদের নেতা ছিলেন
৭.
ইসরাফিলের বাঁশিতে বেসুরো আওয়াজ আজ
৮.
ডায়ানামাইটের ব্যবহার বাড়লে আরও কিছু বিষয়ে নোবেল পুরস্কার দেওয়া যেতো
৯.
পাখিদের ধ্বনিজ্ঞান শেখায় কোন নোয়ান চমস্কি
১০.
‘ঈশ্বর মৃত’ জেনেও সবাই
গডোর জন্যে অপেক্ষা করছে
গর্ভপাত
তোমাকে মেরে ফেললাম, মা
তোমাকে মেরে ফেলেছি, বাবা
মা-বাবা মিলে তোমাকে খুন করে ফেলেছি
বাবার চাকরি, শুধু ক্যারিয়ার
মা খুঁজে বেড়ায় শাড়ি ও গয়না
বাবা চায় জমা হোক কিছু টাকা
গাড়ি-ফ্লেটবাড়ি কেন যে হয় না
তোকে হত্যা করেছি, সোনা
তোকে হত্যা করেছি, মণি
বাবা-মা মিলে তোকে মেরেছি, কলিজাধন
বাবার পার্টি, মা কি পার্লারে
ধরে রাখা চাই যৌবন রেশ
বাবা রগচটা মাও নারীবাদী
ছি ছি, বমি-বমি…, চাই ফিটনেস
তোমাকে খুন করেছি, খোকা
তোমাকে খুন করেছি, খুকি
মা-বাবা মিলে তোমাকে শেষ করে দিয়েছি
মায়ের বন্ধুরা, বাবার পাটনার
চেনা ও অচেনা আধভাঙা মন
মা মডেলিঙে বাবাও আড্ডারু
মুহূর্তে পালায় সময়ের ক্ষণ
তোকে মেরেই ফেলছি, বাবা
তোকে মেরেই ফেললাম, মা
বাবা-মা মিলে খুন করেছি তোকে, গুমও