মঙ্গলবার, ৩০ মার্চ ২০২১, ০৭:২৬ অপরাহ্ন
আন্দালীবের কবিতা
রাবার পাতায় লেখা এলিজি
রাবার পাতা ঝরল বলেই শুনতে পেলাম হঠাৎ –
বিকেল কোথায় গড়িয়ে গেল, শৈলনদীর প্রপাত
বেয়ে অস্ফুট এক শব্দ এল, সঙ্গোপনী সুর –
তাতে জাগল আবার বনভ‚মি, অনেকটা পথ দূর।
সন্ধ্যের আগেই য়্যুকালিপের বাকল খুলে দেখি –
গাছের ভেতর অপার্থিব এক সুগন্ধি আছে কি?
রাবার বনের মধ্যে তখন অনুচ্চ সরসর,
যেন চপল কিছু কাঠবিড়ালী আজ পলায়নপর।
যার ছটফটানি আছে লেখা বনস্থলীর পাতায় –
স্মৃতির মতন জমিয়ে রাখা অদৃশ্য এক খাতায়।
যত লোধ্ররেণু যায় উড়ে ঐ বিকেল বেলার কাছে
যেন বন-বনানীর মধ্যখানে শান্তি রাখা আছে।
নির্জনতার ও’পাশ থেকেই তখন বুনো ফুলের –
প্রায়ান্ধকারে গন্ধ আসে শূর্পনখার চুলের।
হাঁটতে-হাঁটতে ভাবছি যখন রাক্ষুসিদের রূপ,
তখন রক্তে মাখামাখি আকাশ। পৃথিবী নিশ্চুপ।
ইলোরা গওহরের কথা ভাবতে-ভাবতে
ইলোরা গওহরের কথা ভাবতে-ভাবতে
আমি এই স্বল্পমাত্রার লকডাউন ভেঙে
আপাতত ডিসপেনসারি যাব
আমার এই ভাঙা-ভাঙা অবিমৃশ্যকারী
কোয়ারেন্টাইন সময় কাটবে এমন
নাটক-সিনেমা আর হালকা চালের নভেলে
রোগাক্রান্ত মানুষেরা এর মাঝে
হাঁটবে-চলবে আর উৎসব করবে এসে
ইলোরা গওহরের কথা ভেবে আমি
গলি থেকে অল্প দূরের মেইন রোডে যাব
যে’ দিকে একটা সুষ্ঠু দুর্ভিক্ষের আবহ
তৈরি হয়েছে এত দিনে
অহোরাত্র রিলিফের মাল নামছে
আমাদের মধ্যে শ্রেণী-সচেতন যারা
তাদেরও তো ভাঁড়ার ফুরোবে
রিলিফের ট্রাক দেখে ইতস্তত করবে তারা
তারপরে একদিন কাতারে দাঁড়াবে
আমি ইলোরা গওহরের কথা ভাবব আর
দেখব নির্বিরোধী রিলিফের ট্রাক
নিতম্ব দুলিয়ে কত দূর যায়
দেখব মারী ও দুর্ভিক্ষে রাষ্ট্র আমাদের
ভালবেসে খাওয়ায়-পড়ায় কতটা
কতটা ক্যানিবাল বানায়