সোমবার, ১৫ মার্চ ২০২১, ০৫:০৮ অপরাহ্ন
ফেরদৌস নাহারের কবিতা
প্রস্তর যুগের সন্ধ্যা
প্রস্তর যুগের সন্ধ্যা
সে কোন পরম আত্মীয়
গুনে গুনে দিয়েছিল কয়েকটি প্রাচীন মুদ্রা
সবেধন নীলমণি আরাধ্য উপাসনা
ভালোবাসি প্রত্ন পথে আনাগোনা
যদিও তার ঠিকানা জানা নেই
এমন কি নাম পর্যন্ত না
মাটির মেঝেতে শুয়ে বহুরাত
দুপাশে ছড়িয়ে দু’হাত
প্রাচীন মুদ্রা ভাঁজতে ভাঁজতে
বিনি-সুতোর মালা ভেবে গাঁথতে গাঁথতে
হাঁটতে থাকি নিজস্ব বছর
প্রস্তর যুগের সন্ধ্যা দুহাত মেলে ডাকে-আয়!
কেমন অবাক লাগে, একটু অন্যমনা
ভাবতে ভাবতে যাবার হয় না সময়
প্রস্তর যুগকে ডেকে বলি, তুই কাছ আয়
খাঁচা
উলটো দিকে কখনোই তাকাইনি
উঁচু উঁচু বনভূমি,
মাটির পাহাড় মাথা তুলে আকাশে তাকিয়ে আছে
সবুজের মৌতাত মাখা আনন্দ
এসব দেখতে দেখতে চলছি
বিপরীতে কখনই চেয়ে দেখিনি
এখন দেখতে পাচ্ছি বারান্দায় ঝুলে আছে কয়েকশ শূন্য খাঁচা
কোনো পাখি নেই, বিমর্ষমাখা, দুলছে
কারা যেন বলেছিল, শূন্যখাঁচায় এবার অনিবার্য পাখি পোরা হবে
সেই থেকে ওদিকে আর কখনই পা বাড়াইনি
জলপাই পাতার মুকুট
ঠিকানা খুঁজতে গিয়েছিলাম ভূমধ্যসাগর পাড়ে
তোমার কি মনে আছে, পথে পথে গ্রিক কফি
কোলাহলহীন আবর্তে রঙিন মেঘলা চিঠি, কিংবা
দীর্ঘশ্বাসের সঙ্গে জুড়ে দেয়া দূরপাল্লার ছবি, আজ
মনে কর, মনে কর ভুল করে বাড়াতেই হাত
পৌরাণিক আলো এসে গিলে ফেলে চোখের মণি
এসবই তো সেদিনের কথা! জিউসের জন্মক্ষণে
নেমে আসা শরতের ফিনফিনে কুয়াশা। ভাসিয়েছে
আয়ুষ্মান তরী। এঘাটের কুলে ঠেকে ওঘাটের স্মৃতি
হার্পের নতুন সুরে অলিম্পাস জেগে ওঠে, সম্মোহন
আনন্দে জলপাই পাতার মুকুটে সাজিয়েছ প্রতিকৃতি
তার নামে জাদুকর ঋতু বয়ে যায় দিনান্তের দিকে
হে লক্ষ্যভেদী বর্ণিল তরঙ্গ, শনশন হেমন্ত বাতাসে
ঝরাপাতার গুচ্ছ উড়ালে হারানো নাম ফিরে আসে