মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই ২০২১, ০১:২২ পূর্বাহ্ন
আসমা আমান-এর কবিতা
অঙ্কুর
মন খারাপের মধ্যেই এত রোদ উঠেছে
সেই আশায় স্বপ্ন দেখেছে পেয়ে ভরা বীজ
মাটির পিড়ে, জৈব বাড়ির মালিক
একখণ্ড আঙিনায় দাঁড়িয়ে হাই তোলে
তখনও গমগমে পিঁপড়ের ব্যস্ত সংসার
তথাপিও শুকোয়নি একটা দানাও।
সৌরজগতের সৌষ্ঠবে কুঁড়ের মালিকানা
প্রাসাদের বাসিন্দারা নিদ্রামগ্ন হয়ে আছে
নানা হিসাবের মাঝে অবশিষ্ট এই ছোট্ট বীজ
মাটির গহ্বরে শায়িত প্রসূতি
হাওয়া পানি আর রোদ মেখে ঘুমায়
এর মাঝেই ঘটে কত জীবন-মরণ খেলা
তারপর ঘটে এক নিঃশব্দ বিপ্লব
প্রসব-বেদনা নেই রক্তপাত নেই
শুধু উলঙ্গ হয়ে বেরিয়ে আসে হাসিমুখ
ঠিক তখনই ভোর হয় কুঁড়ের মালিকের
স্বপ্নের সঙ্গম মিলিত হয় দিনের চড়া রোদে।
নদী
এ-নদী কোনো আনকোরা সঙ্গীত নয়
আকাশের মুখ প্রতিবিম্বিত অন্তরে
তার, ছোট-বড় নাও দেহের ওপরে
চিরায়ত ঢেউ ভাঙে নিজস্ব কলায় ।
গঙ্গা-যমুনা হোক বা মেঘনা-তেতাস
পাড় ভেঙে বেবাক লোকের নিঃস্ব করে
আপন খেয়ালে গড়ে ওপারের চরে
সেখানেও লেখা থাকে কত ইতিহাস ।
প্রকৃতির কত রূপ কতটুকু জানি?
স্রষ্টার মহিমা জানি তার চেয়ে কম
প্রকৃতির বিরোধ করে বড়ো নির্মম
যেমন পাইনি আজও তিস্তার পানি ।
বিধির বিধান মতন না চলো যদি
ঠিকই শুকিয়ে যাবে তোমাদের নদী ।
মুনাজাত
অপেক্ষা করছিলাম অন্ধকারের গহীনে
একটুখানি কান্নার অবসর মিলবে না?
এ বাড়িতে অকারণ কান্না তীব্রভাবে মানা
অতিরিক্ত নন্দনেশায় আমি আর বাঁচিনে!
এখানে স্বপ্নের পরিধি মধ্যরাতে বিস্তৃত
ভৌগোলিক রীতি ছেড়ে সকাল দেরিতে আসে
স্রষ্টার বিধি ঘুমায় মৃত অন্তরের পাশে
আমার মুনাজাত আভিজাত্যে মুখ আবৃত।
দৈর্ঘ্য-প্রস্থে স্বামীগৃহ পুরোটাই আধুনিক
ধর্ম পালে;যেটুকু লাগে বিনোদনের হিতে
বাকি সবটাই চলে যা ধর্মের বিপরীতে
আমি এই হাবেলির বধূ? ধিক্ শত ধিক্।
যেখানে যেভাবে চললে পাব আমি নাজাত
সেভাবেই কবুল কর আমার মুনাজাত।